শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩০ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর প্রধান মুখপাত্র নিহত

বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর প্রধান মুখপাত্র নিহত

স্বদেশ ডেস্ক:

বৈরুতের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর প্রধান মুখপাত্র নিহত হয়েছেন। হিজবুল্লাহর এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। এই এলাকায় সাধারণত ইসরাইলি হামলা হয় না।

লেবাননের কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব বিবেচনা করার সময় হিজবুল্লাহর সিনিয়র কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে হত্যার সর্বসাম্প্রতিক ঘটনাটি ঘটল।

ইসরাইল বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলীর বেশ কয়েকটি ভবনেও বোমাবর্ষণ করেছে। এখানে দীর্ঘদিন ধরে হিজবুল্লাহর সদর দফতর ছিল। মানুষজনকে সেখান থেকে সরে যাওয়ার সতর্কবার্তা দেয়ার পর হামলাটি করা হয়।

হিজবুল্লাহর এক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, হিজবুল্লাহর গণমাধ্যমবিষয়ক প্রধান মোহাম্মদ আফিফ বৈরুতের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে আরব সমাজতান্ত্রিক বাথ পার্টির কার্যালয়ে হামলায় নিহত হন।

সেপ্টেম্বরে ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ শুরু এবং ইসরাইলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহর নিহত হওয়ার পর থেকে আফিফ বিশেষভাবে সক্রিয় ছিলেন।

গত মাসে ইসরাইলি হামলার আগে আফিফ তড়িঘড়ি করে বৈরুতে একটি সংবাদ সম্মেলন শেষ করেন।

লেবাননের সেনাবাহিনী বলছে, রোববার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর আল-মারিতে এক সামরিক কেন্দ্রে ইসরাইলি হামলায় দুজন সৈন্য নিহত এবং দুজন আহত হয়েছে।

লেবাননের সেনা বাহিনী এই যুদ্ধে অংশ নেয়া থেকে বিরত আছে। ইসরাইলের তরফ থেকে আল-মারি হামলা নিয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য আসেনি।

বৈরুতের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে একটি ব্যস্ত মোড়ের কাছে হামলার আগে ইসরাইলি বাহিনী সেখান থেকে সরে যাওয়ার কোনো সতর্কবার্তা দেয়নি।

ঘটনাস্থলে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের এক ফটোগ্রাফার চারটি মৃতদেহ এবং চারজন আহত ব্যক্তিকে দেখেন। কিন্তু হতাহতের পরিসংখ্যান নিয়ে কোরো সরকারি ঘোষণা দেয়া হয়নি। মানুষদের সেখান থেকে পালাতে দেখা যায়। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

‘আমি ঘুমিয়ে ছিলাম এবং হামলার শব্দ শুনে এবং লোকজনের চিৎকার, গাড়ি ও গুলির শব্দে জেগে উঠি,’ সুহেল হালাবি নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন। ‘সত্যি বলতে আমি হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম। এই প্রথমবার আমি এমন হামলা এত কাছ থেকে অনুভব করেছি।’

বৈরুতের কেন্দ্রে সর্বশেষ ইসরাইলি হামলা করা হয় ১০ অক্টোবর। এ হামলাতে দুটি স্থানে ২২ জন নিহত হয়।

হামাসের ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার পর গাজায় যুদ্ধের সূচনা করার পরদিন থেকেই হিজবুল্লাহ ইসরায়েলে রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন নিক্ষেপ শুরু করে।

ইসরাইল লেবাননে প্রতিশোধমূলক বিমান হামলা শুরু করে এবং সংঘর্ষটি ক্রমাগত বৃদ্ধি পায়, সেপ্টেম্বরে তা যুদ্ধে রূপ নেয়। ইসরাইলি বাহিনী ১ অক্টোবর লেবাননে আগ্রাসন চালায়।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অন্তত ৩,৪০০ নিহত হয়েছে এবং ১২ লাখের বেশি মানুষ তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। নিহতদের মধ্যে কয়েকজন হিজবুল্লাহ যোদ্ধা তা জানা যায়নি।

হিজবুল্লাহ প্রতি দিন ইসরাইলের ভেতরে রকেট নিক্ষেপ করছে, যার পাল্লা বৃদ্ধি পেয়ে এখন মধ্য ইসরাইল পর্যন্ত আঘাত হানছে।

হিজবুল্লহার রকেট আক্রমণে অন্তত ৭৬ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৩১ জন সৈন্য। এর ফলে ৬০ হাজার ইসরাইলি তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।
সূত্র : ভিওএ

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877